কমিউনিটি স্পেস ও বিনোদন ব্যবস্থা
বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে পাকা সড়ক, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, ইন্টারনেট সহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে । তবে, অধিকাংশ গ্রামে খেলার মাঠ এবং কমিউনিটি স্পেসের তীব্র সংকট রয়েছে। অধিকাংশ জমি তিন ফসল হওয়ায় জমিতেও এখন খেলা যাচ্ছে না। যৌথ মালিকানার জমিসমূহ চাষাবাদ কিংবা মাছ চাষের পুকুরে পরিণত হয়েছে। স্কুলের মাঠ ছাড়া খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। ক্রীড়া সামগ্রীর সরবরাহ অপ্রতুল ও অনেকক্ষেত্রে শিশুবান্ধব নয়।
স্কুলের মাঠসমূহকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করে গ্রামের সব বয়সের শিশুদের জন্য খেলার মাঠ গড়ে তোলা সম্ভব । বিভিন্ন আকারের স্কুলের মাঠ রয়েছে । কারিগরি সমীক্ষায় বিভিন্ন আকারের স্কুলের মাঠের জন্য কয়েকটি মডেল তৈরি করা হয়েছে ।
স্কুলের মাঠের পাশাপাশি স্বল্প পরিসরের খোলা জায়গা যেমন নদীর পাড়, বাঁধ, সড়কের পাশের খোলা জায়গা- এসব স্থানে স্থাপন করা যায় এ ধরণের বেশ কয়েকটি প্লেস্কেপ (playscape) ডিজাইন করা হয়েছে । আশা করা যায়- এ ধরণের প্লেস্কেপ সারাদেশের শিশুদের ভেতর জনপ্রিয়তা লাভ করবে ।
গ্রামে নদীর পাড়, দিঘী-পুকুর, ব্রিজের নীচে খোলা জায়গা, বাঁধে গণপরিসর/ সবুজ প্রাঙ্গণ গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে । উক্ত সমীক্ষায় এ ধরণের গণপরিসরের ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে ।
দেশব্যাপী শিশু-কিশোরদের খেলার মাঠের এ সংকটে অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণ খেলার মাঠ, কমিউনিটি স্পেসের জন্য জমি দানে আগ্রহী। এক্ষেত্রে অধিকতর উন্নয়নে সরকারি বিনিয়োগ করার জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে ।
নির্বাচনী ইশতেহার এবং বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় ‘তারুণ্যের শক্তি’ বিকাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । নির্বাচনী ইশতেহারে তারুণ্যের শক্তি বিকাশে উপজেলা পর্যায়ে যুব বিনোদন কেন্দ্র গড়ার অঙ্গীকার রয়েছে যেখানে থাকবে বিভিন্ন ইনডোর গেমসের সুবিধা, মিনি সিনেমা হল, লাইব্রেরি, মাল্টি মিডিয়া সেন্টার, সাহিত্য ও সাংস্কৃতি কর্নার, মিনি থিয়েটার ইত্যাদি থাকবে । এর পাশাপাশি তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ‘উপজেলা যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ গড়ে তোলার ও অঙ্গীকার আছে । উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলমান আছে । অনেক উপজেলায় জমির অভাবে জমি অধিগ্রহণ করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে ।
উপজেলা সদরেও জমির তীব্র সংকট রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/ বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন অবকাঠামো জমির সংকট আরও তীব্র করবে । এই প্রেক্ষিতে, সমীক্ষায় নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার সমূহ বাস্তবায়নে একীভুত স্থাপত্যিক নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । এ ধরণের স্থাপনার পরিচালন- রক্ষণাবেক্ষণের কৌশল ও সমীক্ষায় প্রস্তাব করা হয়েছে ।
কমিউনিটি স্পেস ও বিনোদন ব্যবস্থা সমীক্ষার প্রতিবেদন সমূহ
ক্রমিক |
বিষয় বস্তু |
প্রকাশের তারিখ |
ডাউনলোড |
১ |
Community Space and Recreation-Bangla |
১৮/৬/২০২৩ |
|
২ |
Community Space and Recreation-English |
১৮/৬/২০২৩ |
উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান
উপজেলা মাস্টারপ্ল্যানকে সকল উন্নয়নের আতুর ঘরের সাথে তুলনা করা যায় । উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান মানে শিশুদের খেলার মাঠ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক স্থান, পরিকল্পিত স্থানে আবাসন, টেকসই সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো । উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং প্রয়োগ করা গেলে- দেশের প্রকল্প ব্যয় কমবে , সরকারি প্রকল্পসমূহের মধ্যে অধিকতর সমন্বয় সাধন করা সম্ভবপর হবে । Making count of Public Money -আর ও জবাবদিহিতার সাথে সরকারি টাকা ব্যয় করা যাবে ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কঠিনতম থাবা পৃথিবীতে- বাংলাদেশে এগিয়ে এসেছে । বৃষ্টির অভাবে চলতি বছর আমন চাষ মার খাচ্ছে । ক্লাইমেট স্মার্ট তথ্যনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হলে-আমরা প্রতিনিয়ত নুতন ঝুঁকির মুখোমুখি পড়ব । উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও প্রয়োগ আমাদের ক্লাইমেট স্মার্ট তথ্যনির্ভর প্রকল্প সিদ্ধাস্ত নিতে সহায়তা করবে । এটি ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনার পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে ।
বর্তমানে দেশের প্রায় ১৫ টি উপজেলায় মাস্টারপ্ল্যান সম্পন্ন করা হয়েছে । বর্তমানে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং এলজিইডির কয়েকটি প্রকল্প চলমান আছে । কিন্তু- গতিতে দেশে মাস্টারপ্ল্যান সম্পাদন করা হচ্ছে, তাতে মাস্টারপ্ল্যান সম্পাদনে কয়েক যুগ লেগে যেতে পারে । উপরন্তু, প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানসমূহ মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করা যাচ্ছেনা ।
এ সব বিষয় নিয়ে একটি হলিস্টিক সমাধান বের করার জন্য ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে সমীক্ষা সম্পাদন করা হয়েছে । এ সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে - দেশে চলমান প্রযুক্তি এবং জনবল দিয়ে ৭-৮ বছরে দেশের সকল উপজেলার মাস্টারপ্ল্যান সম্পাদন করা সম্ভব । প্রতিটি মাস্টারপ্ল্যান সম্পাদন করতে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে । প্রতি ১৮ মাসে ৯০ টি মাস্টারপ্ল্যান সম্পাদন করা সম্ভব । দেশের চলমান উন্নয়ন ট্রেন্ড বিবেচনা করে একটি অগ্রাধিকার তালিকা ও প্রস্তাব করা হয়েছে । মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও প্রয়োগ এসডিজি এর অন্যতম টার্গেট । ২০৩০ সালের মধ্যে এ টার্গেট পূরণ করে এসডিজি টার্গেট পুরণ করা সম্ভব ।
বর্তমানে কিছু উপজেলায় মাস্টারপ্ল্যান হয়েছে কিন্তু তা প্রয়োগের কোন ব্যবস্থাপনা নেই । এ সমীক্ষায় জেলা উপজেলা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মাস্টার প্ল্যান প্রয়োগের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাবনাও রয়েছে ।
উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান সমীক্ষার প্রতিবেদন সমূহ
ক্রমিক |
বিষয় বস্তু |
প্রকাশের তারিখ |
ডাউনলোড |
১ |
Upazila Master Plan (Bangla) |
১৮/৬/২০২৩ |
গ্রামীণ গৃহায়ন
বাংলাদেশের গ্রামে পরিকল্পিতভাবে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণের প্রধান সমস্যা অপরিকল্পিত গ্রামীণ আবাসন। অপরিকল্পিত গ্রামীণ আবাসনের জন্য
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে। একইভাবে জলাবদ্ধতাও বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এবং প্যাটার্ণ বদলে যাচ্ছে। একইসাথে, বন্যা অববাহিকাসমূহ বাড়ি/ সড়ক কিংবা অন্যান্য স্থাপনা দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে যাচ্ছে। ফলে, বন্যার প্রকোপ এবং ক্ষয়ক্ষতি ক্রমশ: বেড়ে যাচ্ছে। গ্রামে পরিকল্পিত আবাসন উন্নয়ন সম্ভবপর হলে- জলবায়ু পরিবর্তনে বন্যার ক্রমবর্ধমান ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় এটি অভিযোজন হিসেবে কাজ করবে।
গ্রামে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধিজনিত কারণে ঘর-বাড়ি নির্মাণের ফলে আবাদি জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে- প্রতিবছর গড়ে ০.৫৬ শতাংশ হারে কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে; যার বড় একটি অংশ বসত-ভিটায় রূপান্তরিত হচ্ছে। কৃষিজমি হ্রাসের এ হার অব্যাহত থাকলে দেশ খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে। গ্রামের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে। গ্রামগুলো তার স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হারাবে।
এ চ্যালেন্জ মোকাবেলায় দেশে পরিকল্পিত গ্রামীণ গৃহায়ণ উন্নয়নের উদ্যোগ সীমিত । অথচ জাতীয় গৃহায়ণ নীতি ২০০১, জাতীয় গ্রাম উন্নয়ন নীতি ২০০১ এবং জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১ এ পরিকল্পিত গ্রামীণ গৃহায়ণ এর জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে । এ প্রেক্ষিতে ‘গ্রামীণ আবাসন’ সম্পর্কিত সমীক্ষায় নিম্নবর্ণিত কার্যকর উপায় উদ্ভাবন করা হয়েছে ।
এ সকল কর্মকৌশল নির্ধারণ করে তিনটি পাইলট গ্রামে ( হাওর, সমতল, উপকূল) সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হয়েছে । পাইলট গ্রাম প্রকল্পে এ কর্মকৌশল প্রয়োগ করে তিনটি আধুনিক গ্রাম বিনির্মাণ করা হবে ।
দেশে শিল্প, গৃহায়নের ফলে কৃষিজমি কমছে। অন্যদিকে, জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়তি জনসংখ্যা কৃষিজমিতে অপরিকল্পিতভাবে নতুন বসতি তৈরি করছে। ফলে একদিকে কৃষিজমি কমছে- অন্যদিকে নতুন বসতিতে সড়ক, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি সরবরাহ ইত্যাদি নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণেও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। নতুন সড়ক অবকাঠামো বন্যা-জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন এবং কৃষিজমি সুরক্ষা আইন এখনও পর্যন্ত কার্যকর না হওয়ায় অপরিকল্পিত গ্রামীণ বসতি নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিজমি সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া দেশের তিনটি জেলায় (বগুড়া, রংপুর, গোপালগঞ্জ) গ্রামীণ গৃহায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অন্যদিকে, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দেশের ১১টি উপজেলা সদরে পরিকল্পিত আবাসন তৈরির জন্য প্লট বরাদ্দের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ ধরনের প্রকল্পের প্রভাব বিশ্লেষণসহ সারাদেশব্যাপী তা সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা নিয়ে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় নিবিড় গ্রামীণ আবাসন কৌশল ও চাহিদাভিত্তিক স্থাপত্যিক নকশা সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য পাইলট গ্রামসমূহে ৬১৬টি ইউনিট আবাসন নির্মাণ করা হবে।
গ্রামীণ গৃহায়ন সমীক্ষার প্রতিবেদন সমূহ
ক্রমিক |
বিষয় বস্তু |
প্রকাশের তারিখ |
ডাউনলোড |
১ |
Rural Compact Housing |
১৮/৬/২০২৩ |
‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধি
‘আমার গ্রাম-আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণ করার জন্য স্থানীয় সরকারসমূহের কার্যকর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এ কার্যকর অংশগ্রহণের জন্য এ প্রতিষ্ঠানসমূহের আইনি কাঠামো সংশোধনসহ করারোপ ক্ষমতাও ক্ষেত্র বৃদ্ধি জনবল সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন পর্যায়ে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে এ বিষয়েও সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদসমূহের সম্পদ সংগ্রহে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে যেসব সুপারিশ উঠে এসেছে তা নিম্নরুপ-
ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধি সমীক্ষার প্রতিবেদন সমূহ
ক্রমিক |
বিষয় বস্তু |
প্রকাশের তারিখ |
ডাউনলোড |
১ |
Strengthening Local Government Institutions (UP) Through Resource Mobilisation |
১৮/৬/২০২৩ |