বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে পরিকল্পিত পথযাত্রা
‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কারিগরি সহায়তা প্রকল্প
“গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে ।
কেননা গ্রামই সব উন্নয়নের মূলকেন্দ্র ।
গ্রামের উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যখন বেগবান হবে
তখন গোটা বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সম্মুখপানে ..”
- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে
জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে দেশের প্রতিটি
গ্রামকে পরিকল্পিতভাবে
সাজাতে হবে ..”
- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বঙ্গবন্ধুর দর্শন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং দেশব্যাপী সুষম বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ- শীর্ষক বিশেষ অঙ্গীকার ঘোষণা করেন। এ অঙ্গীকারের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষম ও সবার জন্য উন্নয়ন নিশ্চিত করার দৃঢ়প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের রুপান্তরের রুপকল্পও ঘোষণা করা হয়েছে। এ রুপকল্প অনুযায়ী ধারাবাহিক টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আমার গ্রাম-আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণ- বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সঞ্চারের অন্যতম কর্মকৌশল। অন্যদিকে, এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন এবং মানব উন্নয়ন সূচক (Human Development Index) উন্নয়নেরও অন্যতম কৌশল।
নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮: সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এর ৩.১০ অনুচ্ছেদের অঙ্গীকারে বলা হয়েছে “উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত পয়: নিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুত গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সহ মানসম্মত ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক নগরের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “ এ ইশতেহারের অঙ্গীকারে দেশের গ্রামগুলোকে শহরে রুপান্তরের কথা বলা হয়নি; প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের কথা বলা হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহারের বিশেষ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগ ফেব্রুয়ারী/২০২০ এ একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এই কর্মপরিকল্পনার মূল ভিত্তি প্রবৃদ্ধি সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রামীণ বৈচিত্র ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণায় গুরুত্ব এবং সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে মূল্যযোগ সৃজন। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন দর্শন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, বাংলাদেশ ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গঠনের ভিশন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এই কর্মপরিকল্পনায় প্রতিফলিত হয়েছে। পরবর্তীতে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কর্মপরিকল্পনার মূল অংশসমূহ ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০-২০২৫) এবং বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) এর কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ বাস্তবায়নে সরকারের ২১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্পসমূহকে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ ধারণার সাথে সাজুয্যকরণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি- গ্রামে আধুনিক নগর সেবা সম্প্রসারণের সাথে সম্পর্কিত বিষয়সমূহের আন্ত: মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে সচিব পর্যায়ের কমিটি গঠন করে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ছোট দেশ হলেও এর ভৌগলিক বৈচিত্র্য অনেক। দেশে বিস্তৃত সমতল, বন্যা অববাহিকা ছাড়াও হাওর, উপকূল, চরাঞ্চল, পার্বত্যাঞ্চল, বিল অঞ্চল, বরেন্দ্রভুমি রয়েছে। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকেও বাংলাদেশের গ্রাম বিচিত্র। বাংলাদেশে আয়তনে ছোট, মাঝারি, বড় গ্রাম রয়েছে। অন্যদিক, নব্বই জন জনসংখ্যার গ্রামও যেমন আছে, তেমনি নয় হাজার জনসংখ্যার গ্রামও আছে। এ ধরণের ভৌগলিক এবং অন্যান্য বৈচিত্র্যের গ্রামে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণে অনেক চ্যালেন্জ রয়েছে। উপরন্ত্, বাংলাদেশের গ্রামগুলি পরিকল্পিতভাবে গড়ে না উঠায় বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে জমির প্রাপ্যতাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ সকল চ্যালেন্জ মোকাবেলা করে দেশের সকল গ্রামে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণ করার জন্য সৃজনশীল কর্মকৌশল নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এই তাগিদ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে, ‘আমার গ্রাম- আমার শহর’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে স্থানীয় সরকার বিভাগ অধিভূক্ত নিম্নবর্ণিত নয়টি ক্ষেত্রে ৩৫টি সমীক্ষা এবং ৩০টি গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে।
এ নয়টি বিষয়/ক্ষেত্র সমূহ যথাক্রমে:
এই বিষয়সমূহ -একটি অন্যটির পরিপূরক। যেমন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা – গ্রামীণ যোগাযোগ, হাট-বাজার, গ্রামীণ গৃহায়ন, মাস্টার প্ল্যান-এর সাথে সম্পর্কিত। একই ভাবে স্থানীয় পর্যায়ে সুশাসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহ অন্যান্য সেবা সম্প্রসারণের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তাই, “আমার গ্রাম-আমার শহর” কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে এই আটটি বিষয়ে সমীক্ষা/গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে যাতে দেশের সকল গ্রামে সমন্বিত টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়। কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিম্নরূপঃ
নিম্নে সমীক্ষার বিষয়, সংখ্যা এবং উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হলো:
সমীক্ষার বিষয় ও সংখ্যা |
সমীক্ষার সংক্ষিপ্ত উদ্দেশ্য |
---|---|
গ্রামীন যোগাযোগ (৮টি সমীক্ষা) |
|
গ্রোথ সেন্টার ও গ্রামীন হাট-বাজার (৯টি সমীক্ষা) |
|
উপজেলা উন্নয়ন পরিকল্পনা (৪টি সমীক্ষা) |
|
পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশান (৭টি সমীক্ষা) |
|
গ্রামীন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (৪টি সমীক্ষা) |
|
খেলার মাঠ কমিউনিটি স্পেস এবং বিনোদন ব্যবস্থা (৪টি সমীক্ষা) |
|
নিবিড় গ্রামীন বসতি (২টি সমীক্ষা ) |
|
স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ (২টি সমীক্ষা ) |
|
উক্ত কারিগরি সহায়তা প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০২১- জুন ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ সম্পর্কিত ওয়েবের বিভিন্ন লিংকে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আউটপুটসমূহ প্রকাশ করা হয়েছে।
Document List