সেখ মোহাম্মদ মহসিন
মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এলজিইডির জ্যেষ্ঠতম অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (গ্রেড-২), এলজিইডি সদরদপ্তর, ঢাকা, সেখ মোহাম্মদ মহসিনকে ০২ জানুয়ারি ২০২২ খ্রিস্টাব্দ থেকে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি প্রধান প্রকৌশলী জনাব মোঃ আব্দুর রশীদ খান-এর স্থলাভিষিক্ত হন। পরবর্তীতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে প্রধান প্রকৌশলী (সচিব পদমর্যাদায় গ্রেড-১) পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
সেখ মোহাম্মদ মহসিন ১৯৬৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের মিরশ্বরাই উপজেলার শেখতোলা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ মশিয়ত উল্লাহ চৌধুরী এবং মাতার নাম দেল আফরোজ। তিনি ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।
১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), চট্টগ্রাম (বর্তমানে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট) থেকে পুরকৌশলে স্নাতক সম্মান, ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পুরকৌশলে (জিও টেকনিক্যাল ও ফাউন্ডেশন) স্নাতকোত্তর এবং ২০০২ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
সেখ মোহাম্মদ মহসিন ১৯৮৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে তৎকালীন এলজিইবিতে যোগদান করেন। ৩৩ বছরেরও অধিককালের কর্মজীবনে তিনি উপজেলা প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে তিনি সফলভাবে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ) সহায়তাপুষ্ট সুনামগঞ্জ কমিউনিটিভিত্তিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (এসসিবিআরএমপি), জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) সহায়তাপুষ্ট হাওর অঞ্চলের বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (এইচএফএমএলআইপি)-এর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে ইফাদ এর “জেন্ডার এওয়ার্ড ফর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিয়ন” পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২০১৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে প্রথমে সিলেট অঞ্চলে ও পরে এলজিইডি সদর দপ্তর, ঢাকায় এবং ২০১৯ সালে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে প্রথমে সিলেট বিভাগ ও পরে এলজিইডি সদরদপ্তর, ঢাকা-তে দায়িত্ব পালন করেন।
চাকরিতে যোগদানের পর পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নেন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- স্পেশাল ফাউন্ডেশন ট্রেনিং, রোড স্ট্রাকচার কনস্ট্রাকশন, ইরিগেশন ম্যানেজমেন্ট, রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার মেইনটেন্যান্স, প্লানিং ইমপ্লিমেন্টেশন এন্ড রিপোর্টিং, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এন্ড ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট, রোড কনস্ট্রাকশন, রুরাল রোড মেইন্টেন্যান্স এন্ড এসেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস, ইকোসিস্টেম বেইজড প্লানিং এন্ড ডিজাইন অব রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর ওয়েটল্যান্ড এরিয়া, কমিউনিটি বেইজড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিটি পার্টিসিপেটরি রুরাল ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। প্রশিক্ষণ গ্রহণ, আন্তর্জাতিক সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও সরকারি দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে তিনি ভারত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ করেন।
সেখ মোহাম্মদ মহসিনের স্ত্রী লুবনা আলম চৌধুরী পেশায় গৃহিণী। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্রের জনক। তাঁর সুযোগ্য পুত্র সেখ মোহাম্মদ মাশরুর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বদ্যালয়ের সিভিল ইনিঞ্জনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। কন্যা ফাইরূজ বিনতে মহসিন সামারফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক। কনিষ্ঠ কন্যা ফাররিন বিনতে মহসিন ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।
সেখ মোহাম্মদ মহসিন একজন মেধাবী, চৌকস, সৎ এবং দক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে দাপ্তরিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তিনি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। তিনি এলজিইডির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে তথা আধুনিক শহর ও গ্রাম উন্নয়নের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধা প্রদানে সরকার ঘোষিত সকল কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।